”শ্রমিক বান্ধব ব্লগ”

Bangladesh Center for Workers’ Solidarity

কমিউনিটিতে মায়েদের প্যারেন্টিং সম্পর্কে অসচ্ছতা, বাড়ছে হতাশা!

বর্তমান সমাজ ব্যাবস্থায় একজন নারী শুধু ঘরের কাজ সামলাবেন এটা আশা করা মোটেও সমুচীন নয়। কারণ, যুগের সাথে পাল্টাচ্ছে মানুষের চাহিদা ও জীবনযাপনের ধরণ।  কমিউনিটিতে এখনকার আয়ে পারিবারিক ব্যায় নির্বাহ করা সম্ভব হয় না। তাই পরিবারের স্বচ্ছলতা ও দেশের সার্বিক উন্নয়নে কর্মজিবী নারীর ভূমিকা অনস্বীকার্য।

শিশুর শৈশবকালীন পরিচর্যা অর্থাৎ তাকে যেভাবে বড় করা হয় তার উপর তার ভবিষ্যৎ জীবনের উপড় গভীর প্রভাব বিস্তার করে। বিশেষ করে তার সামাজিক পরিপক্কতা ও মানসিক সুস্থতার বিষয়ে। এই ক্ষেত্রে অভিভাবকদের কিছু বিষয় খেয়াল রাখা খুব জরুরী।

মা যখন ঘরে/ ঘরের বাহিরে কর্মজিবী হন তখন প্রশ্ন উঠে- সন্তানের সুষ্ঠ লালন পালন হচ্ছে তো? বর্তমান কমিউনিটিতে চরম বাস্তবতা হল শিশুর মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্থ হওয়া, শিশু ঠিকমত  খেতে না চাওয়া, অধিকাংশ শিশু বাহিরের খাবার বেশী পছন্দ করে থাকে।

মূলত ০৫টি  ‘’ অক্ষর যুক্ত খাবার যেমনঃ চানাচুর, চিপস, চাটনি, চকলেট, চুইংগাম শিশুদের এখন প্রধান খাবার হয়ে উঠেছে।

মোসাঃ তাসলিমা বেগম (সদস্য-২১শে সমাজ কল্যাণ সংস্থা) বলেন- আমার বয়স ২৪। আমার এক মেয়ের বয়স ০৪ বছর এবং এক ছেলের বয়স ১.৫ বছর। ওদের প্রতি আমি কি ধরনের যত্ন ও পুষ্টিকর খাবার তুলে দিব সে সম্পর্কে আমার কোন ধারনা নেই ফলে আমার সন্তানেরা ঘরের খাবার খেতে পছন্দ করে না, প্রায়ই সময় বিভিন্ন অসুস্থতার মত জটিলতার মধ্যে আমাকে থাকতে হয়।

কোনাবাড়ী ওয়ার্কার্স কমিউনিটি সেন্টার  এবং ২১শে সমাজ কল্যাণ সংস্থা যৌথ ভাবে কমিউনিটির মায়েদের সাথে কথা বলে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি স্পষ্ট করতে সক্ষম হয়েছেঃ

  • বাচ্চারা ঠিকমত খেতে না চাওয়া
  • বাচ্চারা মোবাইল ফোন ছাড়া খেতে না চাওয়া
  • বাচ্চারা বাহিরের খাবারের প্রতি আসক্ত
  • বাচ্চাদের ক্ষ্রিপ্ততা প্রকাশ পাওয়া
  • বাচ্চারা অপুষ্টিতে ভোগা
  • ঠিকমত বাচ্চাদের মানসিক বিকাশ হচ্ছে না
  • বাচ্চাদের শারীরিক গঠন ঠিকমত হচ্ছে না
  • বাচ্চারা অত্যাধিক জেদ প্রবন হওয়া
  • বাচ্চারা বিভিন্ন ধরনের অশালীন ভাষায় কথা বলা  
  • বাচ্চাদের বিভিন্ন ধরনের অসুস্থতা হওয়া- শাসকষ্ট, পুষ্টিহীনতা, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, জ্বর, পেট ফাপা, কোষ্ঠকাঠিন্য, সর্দি-কাশি, রক্তস্বল্পতা ইত্যাদি 

প্রত্যেক মা-বাবার সন্তান পালনের নিজস্ব কিছু ধারা থাকে। কারণ, প্রত্যেক মা-বাবাই তাঁর সন্তানকে রক্ষা করতে চান, সন্তানের ভালো চান। বিশেষজ্ঞরা বলেন, শিশুর বেড়ে ওঠার প্রথম দিকে তাদের প্রতি বেশি মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন। কিন্তু  কমিউনিটিতে সন্তান লালন পালনের পর্যাপ্ত জ্ঞান না থাকার ফলে শিশুর আগামী ভবিষ্যৎ এর বিচক্ষণতা এবং সুন্দর ব্যক্তিত্ব হিসেবে সুনাগরিক হয়ে উঠা এখন প্রবল ঝুঁকির মুখে রয়েছে।

নওশাদ রায়হান

বিসিডাব্লিউএস- কোনাবাড়ী।

Updated: April 24, 2024 — 1:42 pm

The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

”শ্রমিক বান্ধব ব্লগ” © 2018