”শ্রমিক বান্ধব ব্লগ”

Bangladesh Center for Workers’ Solidarity

Month: October 2022

স্বাস্থ্যকর ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রাথমিক আইনের গুরুত্ব।

শৈশবে মানুষ তার ভালো অভ্যাসগুলো গড়ে তোলা শুরু করে। এ অভ্যাস গড়ে তুলতে পরিবার যেমন সাহায্য করে তেমনি সাহায্য করে তার চারপাশের পরিবেশ। আর এসব ভালো অভ্যাস গড়ে উঠার অন্যতম একটি মাধ্যম হচ্ছে কমিউনিটির শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এখানেই শিক্ষার্থী একজন সচেতন মানুষ হিসেবে গড়ে উঠার সুযোগ পেয়ে থাকে।

এই অভ্যাসের একটি বড় সুফল হল সুস্থ থাকার নিশ্চয়তা এবং সুনাগরিক হিসেবে আত্মপ্রকাশ। অস্বাস্থ্যকর ও অনিরাপদ পরিবেশ অনেকের ক্ষেত্রেই বড় ধরণের ক্ষতির কারণ হয়ে দাড়াতে পারে যদি সেখানে আইনের চর্চা ঠিকঠাক ভাবে পালন না করা হয়।

শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকার ২০১৫ সালে একটি পরিপত্রের মাধ্যমে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন নিশ্চিত করা ও মেয়েদের জন্য আলাদা টয়লেটের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়ে থাকে এবং নিরাপদ যৌন হয়রানিমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে ২০০৯ সালে হাইকোর্টের নির্দেশনায় বলা হয়েছে কর্মক্ষেত্র ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব যৌন হয়রানি প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

যার ফলশ্রুতিতে, কোনাবাড়ী বিসিডাব্লিউএস – কোনাবাড়ী অঞ্চলের ১০টির অধিক সরকারি এবং বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরেজমিনে উপস্থিত হবার প্রেক্ষিতে যেসব তথ্য উঠে আসেঃ

  • শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছেলে এবং মেয়েদের জন্য আলাদা টয়লেটের ব্যবস্থা রয়েছে এবং সেগুলো ব্যবহারের উপযোগী।
  • সরকারি পরিপত্রের আলোকে মেয়েদের পিরিয়ড কালীন সময়ে ফ্রীতে/ প্রয়োজনে নগদ মূল্য প্যাডের ব্যবহারের ব্যবস্থা থাকার কথা থাকলেও কোন প্রতিষ্ঠানে সেরকম কোন ব্যবস্থা নেই  তবে, মেয়েদের জন্য আলাদা ভাবে একজন নারী শিক্ষক  নিয়োজিত রয়েছেন যিনি শিক্ষার্থীদের অবস্থানুযায়ী  ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকেন।
  • কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী এন্টিহ্যারাজমেন্ট কমিটি সম্পর্কে অবগত নয় তবে প্রতিষ্ঠানে লিঙ্গ ভিত্তিক কোন ঘটনা ঘটলে শিক্ষকবৃন্দ, কমিটি, অবিভাবকেরা মিমাংসা জনিত ব্যবস্থা নিয়ে থাকে।
  • প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন ব্যবহারে নিষেধ রয়েছে এবং শিক্ষার্থীদের যেকোন সমস্যায় ৯৯৯ এ ফোন করা ও বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে ১০৯ নাম্বারে ফোন করার পরামর্শ দেওয়া হলেও খুব কম আকারে প্রচার করা হয়।
  • ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের তথ্য যোগাযোগ ও প্রযুক্তি বিষয়ে শিক্ষাদান করা হলেও বাংলাদেশ আইসিটি আইন সম্পর্কে কোন প্রকার ধারণা দেওয়া হয় না।

মজার বিষয় হচ্ছে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষকদের আইসিটি আইন, যৌন হয়রানি প্রতিরোধে হাইকোর্টের আদেশ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্যানিটেশন ব্যবস্থা উন্নত করতে ২০১৫ সালের পরিপত্র সম্পর্কে কোন প্রকার ধারণাই নেই।  

মূলত আইন সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা না থাকায় শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে তাদের প্রাপ্য সুবিধা থেকে এবং শিক্ষকেরা বঞ্চিত করছেন অধিকার থেকে। প্রকৃতপক্ষে মানুষের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রকে ঘিরে রেখেছে আইন।

বাংলাদেশ  সংবিধানের ১৫২ অনুচ্ছেদে আইনের ব্যাখ্যায় আইন বলতে অধ্যাদেশ, আদেশ, বিধি, প্রবিধান, উপ-আইন, বিজ্ঞপ্তি ও অন্যান্য আইনগত দলিল এবং বাংলাদেশে আইনের ক্ষমতাসম্পন্ন যে কোনো প্রথা বা রীতিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

সংবিধানে স্বীকৃত মৌলিক অধিকার নিশ্চিতকরণ এবং অন্যের প্রতি নিজের দায়িত্ব পালন এবং শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য একজন মানুষের অবশ্যই আইন সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা থাকা  প্রয়োজন।

সংবিধানের ৩১নং অনুচ্ছেদে সকল নাগরিকের আইনের আশ্রয় লাভের অধিকারকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। আইনের আশ্রয় লাভের ক্ষেত্রে আইন জানা থাকলে আইনের আশ্রয় লাভ করা সহজ হয়। অধিকার সম্পর্কে সচেতন থাকলে তবেই অধিকার আদায়ে সোচ্চার হওয়া যায়।

গার্মেন্টস শিল্প অঞ্চলের খেঁটে খাওয়া শ্রমিক/ অন্যন্য পেশাজীবীদের তাদের সন্তানদের প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা দিতে কমিউনিটির  কোন না কোন প্রতিষ্ঠানে পাঠাচ্ছেন। মূলত মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় কোথাও আইন সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা দেওয়ার মতো পাঠ্যক্রম চালু নেই বিধায় সেসব প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের উপযুক্ত আইন বিষয়ক ধারণা না থাকায় শিক্ষার্থীরা স্বল্পকালীন কিংবা দীর্ঘকালীন শারীরিক ও মানসিক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। এর কারণে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ালেখায় যেমন অনাকাঙ্ক্ষিত ব্যাঘাত ঘটতে পারে, তেমনি তা পুরো পরিবারের উপরও প্রভাব ফেলতে পারে অনেক ক্ষেত্রে  সমস্যা মারাত্মক আকার ধারণ করে বিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়ার মত কারণও সৃষ্টি করতে পারে।

সমস্যা থেকে পরিত্রাণের উপায় হিসেবে বাংলাদেশ সরকারের পাশাপাশি এনজিও গুলোকে স্যানিটেশন, হাইকোর্ট নির্দেশনা এবং আইসিটি আইন সহ অন্যান্য আইন  নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ব্যপক প্রচারণা চালাতে হবে সেই সাথে এনজিওদের উচিত হবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রাথমিক আইন সম্পর্ক অন্তভুক্ত করণের সরকারের উচ্চ মহলে তুলে ধরা।

নওশাদ রায়হান

বিসিডাব্লিউএস- কোনাবাড়ী

Updated: October 11, 2022 — 6:26 pm

বিসিডাব্লিউএস চিকিৎসা সেবা বই যখন অর্থ সাশ্রয়ের অবলম্বন

মোসাঃ মিনা বেগম (বয়স-৩২, পেশা-গৃহিনী), স্বামী কমিউনিটির এমএম নীটওয়্যার লিঃ কারখানায় চাকুরী করেন।  মোসাঃ মিনা বেগম বিয়ের পর থেকে সন্তান নেওয়ার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন কিন্তু সফল না হয়ে তিনি ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে কোনাবাড়ী পপুলার হসপিটালে গাইনী বিশেষজ্ঞ এর তত্বাবধানে চিকিৎসা নিয়ে জানতে পারেন জরায়ুতে ফেলেপিয়ান টিউব ব্লক হবার কারণে তিনি স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় মা হতে পারছেন না। ডাক্তারের ভাষ্য মতে কমপক্ষে দেড় বছর নিয়মিত ভাবে চিকিৎসা গ্রহণ করলে সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী মোসাঃ মিনা বেগম প্রতি মাসে কোনাবাড়ী পপুলার হসপিটালে কমপক্ষে ২/৩ বার ডাক্তারের শরানাপন্ন হতে হয় এবং বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা নিরীক্ষা বাবদ গড়ে ৫,০০০ টাকা করে প্রায় ৪০,০০০ টাকার উপরে ব্যায় করেছেন।

 ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০২২ইং তারিখে মোসাঃ মিনা বেগম কোনাবাড়ী বিসিডাব্লিউএস অফিসে মোসাঃ পারুল বেগম এর সাথে এসে জানতে পারেন বিসিডাব্লিউএস অফিসের কার্যাবলী এবং সেই সাথে চিকিৎসা সেবা বইয়ের সুবিধাবলী।

চিকিৎসা সেবা বইয়ের সুবিধাগুলি জানার পর মোসাঃ মিনা বেগম ৫০ টাকা দিয়ে স্বাস্থ্য সেবা বই সংগ্রহ করে থাকেন এবং এর পর থেকে তিনি যতবার কোনাবাড়ী পপুলার হসপিটালে চিকিৎসা সেবা গ্রহণের জন্য যাচ্ছেন ততবার চিকিৎসা সেবা বই কর্তৃপক্ষকে দেখিয়ে ২৫% করে ছাড় পাচ্ছেন এবং এভাবে তিনি ৪,২০০ টাকা অর্থ সাশ্রয় করতে সক্ষম হয়েছেন।

চিকিৎসা গ্রহণে অর্থ সাশ্রয় পেয়ে মোসাঃ মিনা বেগম বিসিডিব্লিউএস অফিসের নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন সেই সাথে তিনি ব্যক্ত করেন এখন থেকে তিনি বিসিডাব্লিউএস অফিসের মতো সমাজের অসহায় মানুষের জন্য কাজ করে যাবেন এবং অফিসের বিভিন্ন প্রশিক্ষণেও অংশগ্রহণ করবেন। তিনি আরও জানান- যদি প্রথম থেকে এই স্বাস্থ্য সেবা বইয়ের তথ্য জানতে পারতেন তাহলে তার অনেক অর্থ সাশ্রয় হতো।  

এসব কিছুই সম্ভব হয়েছে বিসিডব্লিউএস এর ব্যতিক্রমধর্মী কার্যাবলীর জন্য। কোনাবাড়ী বিসিডাব্লিউএস সমাজের অসহায় জনগণের উন্নয়নে বিভিন্ন ধরণের সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ আয়োজনের পাশাপাশি জনগণের জীবনযাত্রার সার্বিক উন্নয়নে প্রয়োজন মাফিক কাজ করে থাকে। 

নওশাদ রায়হান

বিসিডাব্লিউএস- কোনাবাড়ী।

Updated: October 10, 2022 — 5:28 pm

অবশেষে চাকরীটা ছেড়ে দিলাম বাকিটা ইতিহাস…

অটো রিক্সা বন্ধ বাসে সিট খালি থাকে না, যুদ্ধ কইরা বাসে উঠতে পারা মানে হাজিরা বোনাস পাওয়ার আশা আছে এভাবে সারা মাস যুদ্ধ করে একদিন জ্যামে পরে যাই ,সময়মত পৌছাতে না পারা মানে হাজিরা বোনাস মাইর।আর বাসে উঠলে পিঠ চুলকালে নিজের হাত দিয়ে চুলকাতে হয় না। মানুষের ভিড়ে বাসে উঠলে আর এক মাথায় ঠেলে নিয়ে যায়। বাকিটা ইতিহাসের কথা নাই বললাম..

Updated: October 10, 2022 — 12:46 pm
”শ্রমিক বান্ধব ব্লগ” © 2018