”শ্রমিক বান্ধব ব্লগ”

Bangladesh Center for Workers’ Solidarity

মোসাঃ আসমা বেগমের সুনাগরিক হিসেবে আত্মপ্রকাশ

মোসাঃ আসমা বেগম প্রশিক্ষণ চলাকালীন সময়ে মনস্থির এর চিত্র।

রাষ্ট্র যেমন নাগরিকদের বিবিধ সুযোগ-সুবিধা এবং অধিকার দিয়ে থাকে তেমনি রাষ্ট্রের প্রতিও নাগরিকদের কতগুলো দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করতে হয়। অধিকার ও কর্তব্য পরস্পর নির্ভরশীল ও পরিপূরক।

নাগরিকের প্রধান কর্তব্য হচ্ছে রাষ্ট্রের প্রতি অনুগত্য প্রকাশ করা। অর্থাৎ রাষ্ট্রের নির্দেশ মেনে চলা। রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, অখন্ডতা, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অক্ষুন্ন রাখার জন্য প্রত্যেক নাগরিককে সর্বদা সজাগ এবং চরম ত্যাগের জন্য প্রস্তুত থাকা।

মৌলিক অধিকার, রাষ্ট্রের প্রতি নাগরিকের অধিকার, সুনাগরিক হবার গুণাবলি অর্জন, রাষ্ট্রের প্রচলিত আইন, সংবিধান মেনে চলা এবং আইনের প্রতি সম্মান দেখানো নাগরিকদের অন্যতম দায়িত্ব।

রাষ্ট্রীয় আয়ের প্রধান উৎস নাগরিকদের প্রদেয় কর ও খাজনা, রাষ্ট্রের প্রশাসনিক, প্রতিরক্ষা এবং উন্নয়নমূলক কাজ সম্পাদনের জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন। সুনাগরিক হিসেবে যথাসময়ে কর প্রদান/ পরিশোধ করে রাষ্ট্রীয় কাজে সহযোগিতা করা অন্যতম দায়িত্ব।

মোসাঃ আসমা বেগম ( লিডার, কোনাবাড়ী ওয়ার্কার্স কমিউনিটি সেন্টার- স্থানীয় বাসিন্দা এবং বাড়িওয়ালা, আমবাগ কমিউনিটি) উপরোক্ত তথ্যগুলি ডিসেম্বর ২৪, ২০২১ইং তারিখে সেন্টারের নাগরিক জ্ঞান বিষয়ক প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করে ধারণা লাভ করে ফেব্রুয়ারী ১০, ২০২২ইং তারিখে নিজ বাড়ির হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ করার জন্য কমিউনিটির কাউন্সিলর অফিসে যান। কাউন্সিলর অফিসের সচিবের সাথে যোগাযোগ করে জানতে পারেন ২০১৭-২০২১ সালের সর্বমোট ৬০০০ টাকা ট্যাক্স বকেয়া রয়েছে।

এরপর মোসাঃ আসমা বেগম কাউন্সিলর অফিসের সচিব এবং কাউন্সিলরের সাথে পরামর্শ করে তার সাধ্যমত ০৩ বছরে হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ করে থাকেন।  

মোসাঃ আসমা বেগম কোনাবাড়ী বিসিডব্লিউএস সেন্টারকে জানান এখন থেকে তিনি নিয়মিত ভাবে হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ করবেন এবং আশেপাশের বাড়িওয়ালাদের এই বিষয়ে উৎসাহিত করবেন। এসবই সম্ভব হয়েছে মোসাঃ আসমা বেগম সেন্টারে আয়োজিত বিভিন্ন ধরণের প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করার কারণে। কোনাবাড়ী বিসিডব্লিউএস সেন্টার কারখানা/ কমিউনিটি পর্যায়ে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে তথা দেশের উন্নয়নে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ আয়োজনের মাধ্যমে কাজ করে থাকে।

নওশাদ রায়হান

বিসিডব্লিউএস- কোনাবাড়ী।

Updated: May 15, 2022 — 2:32 pm

সাধারণ গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য টিসিবি পণ্য সহজলভ্য করণ

স্বাধীনতার উত্তরকালে বিপর্যস্ত অর্থনীতি, বিচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা, অবিন্যস্থ বন্দর ইত্যাদির প্রেক্ষাপটে পর্যাপ্ত নিত্য প্রয়োজনীয় ভোগ্য পণ্য ও শিল্পের কাঁচামাল জরুরী ভিত্তিতে যোগান দেয়া এবং ন্যায্য মূল্যে ভোগ্য পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করার  প্রয়োজন দেখা দেয়। এ প্রেক্ষিতে সৃষ্টি হয়  ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) ০১ জানুয়ারী, ১৯৭২ সনে প্রতিষ্ঠিত হয়।

বর্তমান বাজার মূল্য থেকে একেবারে সাশ্রয়ী মূল্য পণ্য (চাল,ডাল,তেল,চিনি,আটা) পাওয়া যায় বলেই সাধারণ মানুষের কাছে এর চাহিদা দিনদিন বেড়েই যাচ্ছে। বিশেষ করে করোনাকালীন সময়ে বাজারের মূল্য বৃদ্ধি, সাধারণ মানুষের আয় ক্ষমতা কমে যাওয়ায় টিসিবি পণ্যের চাহিদা আকাশচুম্বী।

সময়ে সময়ে বিসিডব্লিউএস কোনাবাড়ী সেন্টারের বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণে গার্মেন্টস কর্মীরা তাদের আয়-ব্যয় ও সার্বিক জীবনযাত্রার পরিস্থিতির আলোচনাগুলোকে গুরুত্ব নিয়ে  করোনাকালীন সময়ে গার্মেন্টস শ্রমিকদের জীবনযাত্রা একটু সহজলভ্য করার তাড়না থেকেই বিসিডব্লিউএস কোনাবাড়ী সেন্টার লক্ষ্য করেছে-

গার্মেন্টস শ্রমিক নির্ভর কোনাবাড়ী অঞ্চলে টিসিবি পণ্য বিক্রিয় হয় ঠিকিই কিন্তু তা কখনো আমবাগ কমিউনিটিতে বসবাসরত সাধারণ গার্মেন্টস শ্রমিকেরা টিসিবির ভ্রাম্যমাণ কেন্দ্র হতে পণ্য ক্রয় করতে পারে না কারণ- গার্মেন্টস শ্রমিকেরা জানতেই পারে না টিসিবি পণ্য কবে ও কখন বিক্রয় করা হবে?,  সময় সময়ে টিসিবি পণ্যবাহী গাড়ি কোনাবাড়ীতে আসলেও তা কখনো শ্রমিকদের বসবাসরত আমবাগ কমিউনিটিতে আসে না।  সারা সপ্তাহ টিসিবি পণ্য বিতরণ সকাল ১০টা হতে বিকাল ০৫টা পর্যন্ত চালু থাকলেও সাপ্তাহিক শুক্রবার এবং শনিবার টিসিবি পণ্য বিতরণ বন্ধ থাকে। আর কোনাবাড়ী অঞ্চলের গার্মেন্টস শ্রমিকেরা সপ্তাহে শুক্রবার প্রয়োজনীয় বাজার করার জন্য একদিন সাপ্তাহিক ভাবে সময় পেয়ে থাকে (সাপ্তাহিক শুক্রবার কারখানা বন্ধ থাকে বলে)।

টিসিবির ভ্রাম্যমাণ কেন্দ্র হতে  পণ্য বিতরণের সময় বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই স্থানীয় দোকানদার, বাড়িওয়ালা ও অন্যান্য লোকেরা পণ্য ক্রয় করে থাকে কারণ গার্মেন্টস কর্মীরা তখন শিল্পে কর্মরত থাকে এবং সাধারণ অসহায় গরীব জনগণ তখন দৈনিক রোজগারের জন্য খুব ভোরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর্মরত থাকেন।

বিসিডব্লিউএস কোনাবাড়ী সেন্টার লিডার এবং অন্যান্য শ্রমিকদের নিকট হতে টিসিবি পণ্য সহজলভ্য করার আবেদনের প্রেক্ষিতে,  আমবাগ কমিউনিটির গার্মেন্টস শ্রমিক এবং তাদের পরিবার ও অন্যান্য পেশাজীবীদের জন্য টিসিবির পূর্বের নিতি বদলে টিসিবি পণ্য অসহায় শ্রমিকদের  দৌড় গোড়ায় পৌছে দিতে বিসিডব্লিউএস কোনাবাড়ী সেন্টার নিম্নোক্ত পদক্ষেপ নিয়ে থাকেঃ

  • জানুয়ারি ২৫, ২০২২ইং তারিখে সরকারি সেবা ৩৩৩ নাম্বার এর মাধ্যমে উপরোক্ত বিষয়ে কথা বলে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী কর্মকর্তার নাম্বার সংগ্রহ করণ।  
  • জানুয়ারি ২৬, ২০২২ইং তারিখে নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে উপরোক্ত বিষয়ে কথা বলে কোন প্রকার প্রতিকার না পাওয়া এবং নির্বাহী করমকর্তা হতে টিসিবি আঞ্চলিক কার্যালয় ও টিসিবি ডিলারের সাথে যোগাযোগের পরামর্শ গ্রহণ।
  • জানুয়ারি ৩০, ২০২২ ইং তারিখে উপরোক্ত বিষয়ে টিসিবির আঞ্চলিক কার্যালয়ের কার্যনির্বাহী কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করণ ও কোন প্রকার প্রতিকার না পাওয়া ( আঞ্চলিক কার্যালয় জানিয়েছে  টিসিবি সরকারি কার্যক্রম তাই সাপ্তাহিক শুক্রবার এবং শনিবার বন্ধ থাকবে এটাই স্বাভাবিক)।
  • জানুয়ারি ৩১, ২০২২ ইং তারিখে আঞ্চলিক ডিলারের সাথে যোগাযোগ করে প্রতিয়মান হয় যে  টিসিবির কর্মকর্তা স্থানীয় দোকানের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে তারা পণ্য সরবরাহে তালিকাধারী ডিলারশীপের সাথে পরোক্ষ ভাবে যুক্ত রয়েছেন।
  • জানুয়ারি ৩১, ২০২২ইং তারিখে টিসিবি পণ্য সহজলভ্য করণে   বিসিডব্লিউএস হেড অফিসের সাথে আলোচনার মাধ্যমে উপরোক্ত কার্যক্রম তুলে ধরে নিম্নলিখিত প্রয়োজনীয় পরামর্শ, দিকনির্দেশা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়ঃ
    • – বিসিডব্লিউএস কোনাবাড়ী সেন্টার  থেকে স্টেকহোল্ডার মিটিং এর আয়োজন
    • – বিসিডব্লিউএস থেকে সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে  আলোচনা করণ
    • – ২১শে সমাজ কল্যাণ সংস্থার (এসোসিয়েশন) সদস্যদের সম্পৃক্ত করণ
  • ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০২২ইং তারিখে বিসিডব্লিউএস কোনাবাড়ী সেন্টারে টিসিবি প্রাপ্তির বাস্তব সমস্যাগুলি উল্লেখ্য করে টিসিবি পণ্যের অসহজলভ্যতার ব্যাপারে স্টেকহোল্ডার মিটিং এ আলোচনার প্রেক্ষিতে কাউন্সিলর অফিস থেকে যথাযথ সহায়তা করনের আশ্বাস দেওয়া হয়।

মার্চ ০৩, ২০২২ইং তারিখে শ্রমিকের চাহিদা মতো  কাউন্সিলর অফিস থেকে  টিসিবি পণ্য শ্রমিক নির্ভর আমবাগ কমিউনিটিতে সরবরাহের স্বিদ্ধান্ত ১০নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর অফিস হতে যোগাযোগ করে বিসিডব্লিউএস কোনাবাড়ী সেন্টারকে জানিয়ে দেওয়ার তথ্য পাবার পরপরই  বিসিডব্লিউএস কোনাবাড়ী  সেন্টার, এসোসিয়েশন (২১শে সমাজ কল্যাণ সংস্থা) সদস্যদের সাথে আলোচনা করে তথ্য সংগ্রহ ও যাচাই বাছাই করে ৭০ জনের তালিকা (শ্রমিক/শ্রমিকের পরিবার) কাউন্সিলর অফিস বরাবর জমা দেওয়ার প্রেক্ষিতে উক্ত ৭০ জনকে কাউন্সিলর অফিস হতে টিসিবি পণ্য ক্রয় সংক্রান্ত কার্ড বিতরণ করা হয়।

কাউন্সিলর অফিস হতে টিসিবি প্রাপ্ত কার্ড ধারীরা মার্চ ২১, ২৮,  ২৯, এপ্রিল ০১ (শুক্রবার) এবং ১১, ২০২২ইং তরিখে আমবাগ কমিউনিটির নাদের আলী নজর দিঘী স্কুল প্রাঙ্গণ থেকে তাদের টিসিবি কার্ড দেখিয়ে টিসিবির ভ্রাম্যামাণ কেন্দ্র হতে ০২ কেজি তেল, ০২ কেজি চিনি, ০২ কেজি ডাল এবং ০২ কেজি ছোলা ৫৬০ টাকা দিয়ে ক্রয় করে থাকে যা বর্তমান বাজার মূল্য থেকে ২৮০ টাকা সাশ্রয়ী মূল্যে।

বিসিডব্লিউএস কোনাবাড়ী সেন্টারের এমন অভাবনীয় কাজে টিসিবি কার্ডধারীরা সকলেই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন সেই সাথে তারা সকলে বিসিডব্লিউএস এবং কোনাবাড়ী সেন্টারকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

নওশাদ রায়হান

বিসিডব্লিউএস- কোনাবাড়ী।

Updated: April 13, 2022 — 3:04 pm

একজন গার্মেস্টস শ্রমিক হয়ে এই রাষ্ট্রের কাছে আমার প্রশ্ন ?

আমরা বাংলাদেশী গার্মেস্টস শ্রমিক

আর বাংলাদেশের উন্নয়নের সবথেকে বেশি অবদান আমাদের

আর সবথেকে বেশি অবদান আমাদের বলেই হয়তো

আমাদের দেশে

চাল ৮০ টাকা কেজি

ডাল ১২০ বা ১৫০ টাকা কেজি

তেল দুইশো টাকা কেজি

পেয়াজ ২৫০ টাকা থেকে ৩০০টাকা কেজি হয়

ডাক্তারের ভিজিট ৭০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা

বাড়ি ভাড়া ৩০০০ টাকা শুরু করে ৮ নয় হাজার

আর বাকি গুলো না হয় নাই বললাম

এতে বুঝতেই পারছেন বাংলাদেশের সবকিছুরই খুব দাম

তবে হ্যাঁ বাংলাদেশে একটা জিনিসই শুধু সস্তা

আর সেইটা হলো গার্মেস্টস শ্রমিকদের শ্রম

আর সেই জন্যই একজন গার্মেস্টস শ্রমিকের একদিনের হাজিরা ২৬৬ টাকা

এখন বলেন আমরা ২৬৬ টাকা হাজিরার শ্রমিক হয়ে

এতো দামি দামি জিনিস কিনে খাবো কি করে

এতো দামি চিকিৎসা করবো কি করে

একজন গার্মেস্টস শ্রমিক হয়ে এই রাষ্ট্রের কাছে আমার প্রশ্ন

আমরা গার্মেস্টস শ্রমিকরা জানতে চাই

চাল ডাল তেলের দাম যদি ৬০ থেকে ২০০ টাকা হতে পারে তাহলে আমাদের গার্মেস্টস শ্রমিক দের বেতন কেন নুন্যতম ২২ হাজার টাকা হবে না

Updated: March 25, 2022 — 2:59 pm
”শ্রমিক বান্ধব ব্লগ” © 2018